অত্যাধিক ডায়রিয়ার লক্ষণ - ডায়রিয়া নির্মূলে বিশেষ ঘরোয়া উপায়
কারণ ডায়রিয়া এরকম একটি রোগ যেটা কিছুটা ঘরোয়া উপায় ভালো করা সম্ভব। তাহলে চলুন নিচের অংশগুলো থেকে বিস্তারিত ভাবে জেনে নেওয়া যাক অত্যাধিক ডায়রিয়ার লক্ষণ এবং ডায়রিয়া নির্মূলে বিশেষ ঘরোয়া উপায় গুলো।
পোস্ট সূচিপত্রঃ অত্যাধিক ডায়রিয়ার লক্ষণ - ডায়রিয়া নির্মূলে বিশেষ ঘরোয়া উপায়
- ডায়রিয়া কত ধরনের এবং কি কি
 - ডায়রিয়া হবার বিশেষ লক্ষণ সমূহ
 - ডায়রিয়া থেকে বাঁচার কার্যকরী ওষুধ
 - ডায়রিয়া হলে কখন চিন্তার বিষয়
 - ডায়রিয়া থেকে বাঁচার কার্যকারী খাবার সমূহ
 - বাচ্চার অধিক পাতলা পায়খানা থেকে বাঁচার উপায়
 - ডায়রিয়া হলে যে ভুলগুলো একদম করা যাবে না
 - ডায়রিয়া নির্মূলে বিশেষ ঘরোয়া উপায়
 - আমাদের বিশেষ কথা
 
ডায়রিয়া কত ধরনের এবং কি কি
  ডায়রিয়া বলতে প্রতিদিন তিনবারের বেশি যদি পাতলা পায়খানা বা তরল মলত্যাগ করা
  হয় তাহলে সেটাকে বলা হয় ডায়রিয়া। এই ডায়রিয়া বিভিন্ন কারণে হয়ে থাকে
  যেমন অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার ফলে, অতিরিক্ত গরমের
  কারণে, অতিরিক্ত শীতের কারণে। ডায়রিয়া ঠিক কয়েকদিন ধরে হয়ে থাকে
  সেজন্য এর ফলে প্রচুর পরিমাণ তরল বের হয়ে যায় এতে করে শরীরে পানি শূন্যতা দেখা
  দেয়। 
আরো পড়ুনঃ পাতলা পায়খানা হলে ঔষধ - পাতলা পায়খানা কেন হয়
  অনেকে প্রশ্ন করে থাকেন ডায়রিয়া কত ধরনের এবং কি কি আসলে ডায়রিয়াকে মূলত
  তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়। তবে এই তিনটির মধ্যে যদি প্রথমটি হয়ে থাকে তাহলে
  সেটা সেটার জন্য চিন্তার কোন কারণ নেই কিন্তু বাকি দুটো কিছুটা মারাত্মক হয়ে
  থাকে। ডায়রিয়াকে তিন ভাগে ভাগ করা হয় সেগুলো হলঃ 
- পানির মত স্বল্প স্থায়ী ডায়রিয়া
 - রক্তযুক্ত স্বল্প স্থায়ী ডায়রিয়া
 - 
    দীর্ঘ স্থায়ী ডায়রিয়া (যেটা দুই সপ্তাহের বেশি ধরে হয়ে
    থাকলে)  
 
  যদি পানির মত স্বল্প স্থায়ী ডায়রিয়া হয় তাহলে সেটা কলেরা সংক্রমণের কারণে হতে
  পারে। আর যদি রক্ত যুক্ত স্বল্প স্থায়ী ডায়রিয়া হয় তাহলে এটা হতে পারে
  আমাশয়। এবং দীর্ঘ স্থায়ী ডায়রিয়া হলে এটা মারাত্মক হতে পারে তাই দ্রুত
  চিকিৎসা নেওয়া প্রয়োজন। 
ডায়রিয়া হবার বিশেষ লক্ষণ সমূহ
ডায়রিয়ার বেশ কিছু উপসর্গ অর্থাৎ লক্ষণ রয়েছে এগুলো যদি কোন ব্যক্তির মধ্যে দেখা যায় তাহলে ধরে নেওয়া যেতে পারে সেই ব্যক্তি ডায়রিয়া হয়েছে। ডায়রিয়া হবার বিশেষ লক্ষণ সমূহ হলঃ
- পেট ফুলে ফেঁপে থাকা
 - 
    পেটে খিচুনি অথবা ব্যথা অনুভূত হওয়া
 - বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া
 - একেবারে পানির মতো মল 
 - মলের সাথে রক্ত বের হওয়া
 - ঘন ঘন মলত্যাগ
 - মল অতিরিক্ত দুর্গন্ধযুক্ত হওয়া
 
ডায়রিয়া থেকে বাঁচার কার্যকরী ওষুধ
  ডায়রিয়া হলে সেটা ভালো করার জন্য অনেকেই ঔষধ খেতে চলে যান আসলে ডায়রিয়া হলে
  ওষুধ খাওয়ার তেমন একটা প্রয়োজন পড়ে না কারণ আপনি যদি কিছু ঘরোয়া উপায়
  অবলম্বন করেন তাহলে সেটা এমনিতেই ভালো হয়ে যায় যেমন ডায়রিয়া হলে শরীর থেকে
  প্রচুর পরিমাণ পানি ঘাটতি দেখা দেয় তাই খাবার স্যালাইন যদি খেতে পারেন তাহলে
  ডায়রিয়া ভালো হয়ে যায় বেশিরভাগ সময়। তারপরেও কিছু ওষুধ খেতে পারেন
  সেগুলো হলোঃ 
- Amodis 400
 - Metro 400
 - Emotel Tablet
 - Flontin 500
 
আরো পড়ুনঃ ঔষধ ছাড়াই গ্যাস্ট্রিক দূর করার জাদুকরি উপায়
  এগুলো ওষুধ খেতে পারবেন তবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কখনোই কোন ঔষধ সেবন করবেন
  না। আর আপনার ডায়রিয়ার ধরণ অনুযায়ী ঔষধ ভিন্ন হতে পারে তাই সেটা আগে ভালোভাবে
  জেনে নিবেন তারপর ওষুধ খাবেন। 
ডায়রিয়া হলে কখন চিন্তার বিষয়
  ডায়রিয়া হলে অতিরিক্ত চিন্তা করার প্রয়োজন নাই কারণ এটা কয়েকদিনের মধ্যে ভালো
  হয়ে যাই। তবে হ্যাঁ অনেক সময় ডায়রিয়া হলে সেটা চিন্তার বিষয় হতে পারে
  তবে কখন ডায়রিয়া হলে চিন্তার বিষয় সেটা আপনাদের জানা প্রয়োজন। ডায়রিয়া
  মূলত দুই-তিন দিনের মধ্যে ভালো হয়ে যায় তবে যদি দেখেন দুই সপ্তাহের বেশি ধরে
  ডায়রিয়া রয়েছে তাহলে সেটা হতে পারে চিন্তার বিষয়। তাই সেই সময় দ্রুত
  চিকিৎসকের কাছে যাবেন।
ডায়রিয়া থেকে বাঁচার কার্যকারী খাবার সমূহ
  ডায়রিয়া হলে যেহেতু প্রচুর পরিমাণ শরীর থেকে পানি বের হয়ে যায় সেজন্য পানি
  শূন্যতা দেখা দিয়ে থাকে। তাই ডায়রিয়া থেকে বাঁচার কার্যকরী খাবার হলো
  বেশি বেশি তরল জাতীয় খাবার খেতে হবে। এবং অস্বাস্থ্যকর এবং অতিরিক্ত তেল বা
  ঝাল যুক্ত খাবার খাওয়া যাবে না। ডায়রিয়া থেকে বাঁচার জন্য কার্যকরী খাবার
  গুলো হলোঃ
- খাবার স্যালাইন পানি
 - ডাবের পানি
 - ভাতের মাড়
 - চিড়ার পানি
 - পাকা কলা
 - পাকা পেঁপে
 - আনারস
 - কমলা
 - আখরোট
 - জাম্বুরা
 
  ডায়রিয়া থেকে বাঁচার জন্য এই তরল জাতীয় খাবার গুলো বেশি বেশি খেতে হবে আর
  আরেকটি বিষয় হলো শিশুদের ক্ষেত্রে তরল জাতীয় খাবারের পাশাপাশি মায়ের
  বুকের দুধ খাওয়ানো চালিয়ে যেতে হবে।
বাচ্চার অধিক পাতলা পায়খানা থেকে বাঁচার উপায়
  ছোট বাচ্চাদের অধিক পাতলা পায়খানা হলে ঔষধ খাওয়ানোর চেয়ে কিছু ঘরোয়া
  উপায় মেনে চললে তাড়াতাড়ি পাতলা পায়খানা থেকে মুক্তি পেতে পারে। বাচ্চার
  যদি অধিক পাতলা পায়খানা হতে হবে এগুলো করার চেষ্টা করবেন।
১। শিশুকে বুকের দুধ অথবা বোতলের দুধ খাওয়ানো চালিয়ে যেতে হবে।
২। বাচ্চাদের একবারে অধিক বেশি পরিমাণ না খাইয়ে তিন-চার ঘন্টা পর পর অল্প পরিমাণ করে খাওয়াবেন।
আরো পড়ুনঃ গলা ব্যথা কেন হয়ে থাকে - গলা ব্যথা থেকে বাঁচার উপায় কি
৩। তরল পানিও বেশি বেশি খাওয়াবেন যেমন ডাবের পানি খাওয়াতে পারেন।
৪। বাচ্চাদের খাবারে যে পরিমাণ ফর্মুলা নির্দেশ করা রয়েছে তার থেকে বেশি পরিমাণ তরল খাবার খাওয়াবেন না।
৫। বাচ্চার অতিরিক্ত গরম লাগছে কিনা বা ঠান্ডা লাগছে কিনা সেটা যাচাই করবেন এবং সুরক্ষিত রাখার চেষ্টা করবেন।
  এগুলো করার পরেও যদি দেখেন পাতলা পায়খানা ভালো হচ্ছে না তাহলে অবশ্যই দ্রুত
  চিকিৎসকের কাছে বাচ্চা কে নিয়ে যাবেন তাহলে আশা করা যায় পাতলা পায়খানা ভালো
  হয়ে যাবে।
ডায়রিয়া হলে যে ভুলগুলো একদম করা যাবে না
ডায়রিয়া হলে আমাদের মধ্যে অনেকেই বিভিন্ন রকম ভুল করে থাকেন আর এগুলো ভুল হতে পারে অনেক বেশি বিপদজনক। ডায়রিয়া হলে যে ভুলগুলো একদম করা যাবে না সেগুলো হল।
- 
    যাদের ডায়াবেটিস আছে তারা ডায়রিয়া হলে খাবার স্যালাইন খেতে চায় না আসলে এটা
    একটা বড় ভুল। যতই ডায়াবেটিস থাকুক খাবার স্যালাইন খেতে হবে।
 - 
    অনেকে রয়েছে বাড়িতে বিভিন্ন কিছু দিয়ে স্যালাইন তৈরি করেন এটা একটা বড়
    ধরনের ভুল।
 - 
    অনেকে আবার দোকান থেকে কেনা স্যালাইন তৈরি করতে গাফিলতি করে অর্থাৎ ঠিক নিয়মে
    তৈরি না করে খেয়ে থাকে এটাও মারাত্মক ভুল।
 - 
    আরেকটি সবচেয়ে বড় ভুল হল একটু পাতলা পায়খানা হলে বা ডায়রিয়ার লক্ষণ দেখা
    দিলে সেটা বন্ধ করার জন্য ডাক্তারি ঔষধ বেশি বেশি সেবন করে এটা মারাত্মক হতে
    পারে। 
 
ডায়রিয়া নির্মূলে বিশেষ ঘরোয়া উপায়
  ডায়রিয়ার নির্মূল করার জন্য অনেকগুলো উপায়ই তো মধ্যে আপনাদের বলে দিয়েছি যেমন
  বেশি বেশি তরল পানি ও পান করতে হবে, খাবার স্যালাইন মাঝে মাঝে পান করতে
  হবে, পর্যাপ্ত পরিমাণ বিশ্রাম নিতে হবে এবং একেবারে না খেয়ে থাকা যাবে না
  হালকা পরিমাণ করে মাঝে মাঝে তরল খাবার খেতে হবে তবে খেয়াল রাখবেন খাবার জন্য
  অতিরিক্ত ঝাল যুক্ত এবং তেল যুক্ত না হয় যদি পারেন তাহলে কোন রকম ঝাল ছাড়া
  খাবার খাওয়ার চেষ্টা করবেন। ইনশাআল্লাহ তাহলে খুব তাড়াতাড়ি ডায়রিয়া
  ভালো হয়ে যাবে। 
আমাদের বিশেষ কথা
আশা করছি আজকের আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে আপনারা জানতে পেরেছেন অত্যাধিক ডায়রিয়ার লক্ষণ ডায়রিয়া নির্মূলে বিশেষ ঘরোয়া উপায় এবং ডায়রিয়া সম্পর্কিত আরো অনেক কিছু বিষয়।বর্তমানে অতিরিক্ত গরম সেজন্য একটু ঠান্ডাতে থাকার চেষ্টা করবেন।
এবং ঘন ঘন ঠান্ডা পানি পান করবে না। অতিরিক্ত ঝাল ও তেল জাতীয় খাবার খাবেন না। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং এরকম আরো তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ফলো করবেন ধন্যবাদ।

.png)
মিহি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url